বর্তমান যুগে তথ্য সুরক্ষিত রাখাটা একটা বিশাল চ্যালেঞ্জ। চারপাশে সাইবার অ্যাটাক বাড়ছে, ডেটা লিক হয়ে যাচ্ছে, আর আমাদের ব্যক্তিগত তথ্য চলে যাচ্ছে ভুল হাতে। এই পরিস্থিতিতে নিজের ডেটা, নিজের ব্যবসাকে সুরক্ষিত রাখাটা খুব দরকার। না হলে বড়সড় ক্ষতির মুখে পড়তে হতে পারে। তাই ইনফরমেশন সিকিউরিটি ম্যানেজমেন্ট (Information Security Management) সম্পর্কে আমাদের ধারণা থাকা উচিত।নিরাপত্তা কিভাবে নিশ্চিত করতে হয়, সেই বিষয়ে এবার বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
তথ্য সুরক্ষা ব্যবস্থাপনার মূল ভিত্তি
১. তথ্যের শ্রেণীবিন্যাস কেন জরুরি?
২. তথ্যের অধিকার নিশ্চিত করুন
৩. কর্মীদের সচেতনতা বাড়ানোর কৌশল
বর্তমান ডিজিটাল যুগে ডেটা বা তথ্যের সুরক্ষা একটা বড় চ্যালেঞ্জ। আপনার ডেটা কতটা গুরুত্বপূর্ণ, সেটা আগে বুঝতে হবে। সব ডেটা সমান নয়। কিছু ডেটা আছে যেগুলো খুব সংবেদনশীল, যেমন – গ্রাহকদের ব্যক্তিগত তথ্য, আর্থিক তথ্য, ব্যবসার গোপন প্ল্যান ইত্যাদি। এই ডেটাগুলো যদি ভুল হাতে চলে যায়, তাহলে অনেক বড় ক্ষতি হতে পারে। তাই কোন ডেটা কতটা গুরুত্বপূর্ণ, সেটা জেনে সে অনুযায়ী সুরক্ষার ব্যবস্থা নিতে হবে। ডেটাকে আলাদা আলাদা ভাগে ভাগ করে, যেমন – গোপনীয়, সংবেদনশীল, সাধারণ – এভাবে ভাগ করলে सुरक्षा পরিকল্পনা করতে সুবিধা হয়।ডেটার অধিকার সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকা দরকার। ডেটা কে ব্যবহার করতে পারবে, কিভাবে ব্যবহার করতে পারবে, সেই বিষয়ে একটা নিয়ম তৈরি করতে হবে। কোম্পানির ভেতরে এবং বাইরের लोगोंদের মধ্যে ডেটা ব্যবহারের অধিকার সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে হবে। গ্রাহকদের ডেটা কিভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে, সেটা তাদের জানাতে হবে এবং তাদের অধিকারগুলো সম্পর্কেও অবগত করতে হবে। যদি কেউ তার ডেটা দেখতে চায় বা সংশোধন করতে চায়, তাহলে সেই সুযোগ তাকে দিতে হবে। ডেটা সুরক্ষা আইন মেনে চলাটা খুব জরুরি, তাই এই বিষয়ে সবসময় নজর রাখতে হবে।কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়াটা খুব দরকার। কর্মীরা যদি ডেটা সুরক্ষার নিয়মগুলো না জানে, তাহলে অজান্তেই অনেক ভুল হয়ে যেতে পারে। তাই তাদের নিয়মিত প্রশিক্ষণ দিতে হবে। প্রশিক্ষণে শেখাতে হবে কিভাবে তারা ফিশিং অ্যাটাক চিনতে পারবে, কিভাবে শক্তিশালী পাসওয়ার্ড তৈরি করতে পারবে, কিভাবে সন্দেহজনক ইমেইল বা লিংকে ক্লিক করা থেকে নিজেদের বাঁচাতে পারবে ইত্যাদি। কর্মীদের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন ধরনের কর্মশালা, সেমিনার এবং অনলাইন কোর্সের ব্যবস্থা করতে হবে। সেই সাথে, ডেটা সুরক্ষা বিষয়ক নিয়মগুলো অফিসের দেওয়ালে বা নোটিশ বোর্ডে লাগিয়ে রাখতে হবে, যাতে সবাই সবসময় মনে রাখে।ঝুঁকি মূল্যায়ন এবং দুর্বলতা চিহ্নিতকরণ
১. নিয়মিত নিরাপত্তা নিরীক্ষা
২. দুর্বলতা মূল্যায়ন প্রক্রিয়া
৩. ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার গুরুত্ব
আপনার সিস্টেম এবং নেটওয়ার্কে কি কি দুর্বলতা আছে, তা খুঁজে বের করতে হবে। নিয়মিত নিরাপত্তা নিরীক্ষা (Security Audit) করার মাধ্যমে এটা করা সম্ভব। নিরাপত্তা নিরীক্ষার মাধ্যমে সিস্টেমের দুর্বলতাগুলো চিহ্নিত করে সেগুলোকে সমাধানের ব্যবস্থা নিতে হবে। দুর্বলতা মূল্যায়ন একটি চলমান প্রক্রিয়া। নতুন নতুন ঝুঁকি এবং দুর্বলতা নিয়মিতভাবে দেখা দিতে পারে, তাই নিয়মিতভাবে মূল্যায়ন করা দরকার।ঝুঁকি চিহ্নিত করার পরে, সেগুলো কিভাবে মোকাবেলা করতে হবে, তার একটা পরিকল্পনা করতে হবে। কোন ঝুঁকিগুলোর কারণে ব্যবসার বেশি ক্ষতি হতে পারে, সেগুলোকে আগে চিহ্নিত করতে হবে এবং সেগুলোর জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। ঝুঁকি কমানোর জন্য বিভিন্ন ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিতে হতে পারে, যেমন – ফায়ারওয়াল স্থাপন করা, ডেটা এনক্রিপ্ট করা, নিয়মিত সফটওয়্যার আপডেট করা ইত্যাদি। ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার জন্য একটা ভালো প্ল্যান তৈরি করতে পারলে ব্যবসার অনেক ক্ষতি থেকে বাঁচা যেতে পারে।নিরাপত্তা নীতি এবং পদ্ধতি তৈরি
১. অ্যাক্সেস কন্ট্রোল পলিসি
২. ডেটা ব্যাকআপ এবং পুনরুদ্ধার পদ্ধতি
৩. ঘটনার প্রতিক্রিয়া পরিকল্পনা
একটা সুস্পষ্ট নিরাপত্তা নীতি তৈরি করতে হবে। এই নীতিতে ডেটা কিভাবে সুরক্ষিত থাকবে, কে কোন ডেটা ব্যবহার করতে পারবে, পাসওয়ার্ডের নিয়ম কি হবে, ইত্যাদি বিষয়গুলো উল্লেখ থাকতে হবে। কর্মীদের জন্য একটা সুস্পষ্ট আচরণবিধি তৈরি করতে হবে, যেখানে তারা কিভাবে ডেটা ব্যবহার করবে, কি করা উচিত আর কি করা উচিত না, সেই বিষয়ে বিস্তারিত নির্দেশনা থাকবে। নিরাপত্তা নীতি নিয়মিত আপডেট করতে হবে, যাতে নতুন ঝুঁকিগুলোর সাথে মোকাবিলা করা যায়।কে কোন ডেটা অ্যাক্সেস করতে পারবে, তার একটা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা থাকতে হবে। শুধুমাত্র যাদের প্রয়োজন, তারাই যেন ডেটা অ্যাক্সেস করতে পারে। কর্মীদের ভূমিকা এবং দায়িত্ব অনুযায়ী অ্যাক্সেস কন্ট্রোল সেট করতে হবে। নিয়মিতভাবে অ্যাক্সেস লগ নিরীক্ষণ করতে হবে, যাতে কোনো অননুমোদিত অ্যাক্সেস ধরা পড়লে সাথে সাথে ব্যবস্থা নেয়া যায়।নিয়মিত ডেটা ব্যাকআপ রাখতে হবে। যদি কোনো কারণে ডেটা হারিয়ে যায় বা নষ্ট হয়ে যায়, তাহলে ব্যাকআপ থেকে ডেটা পুনরুদ্ধার করা যায়। ডেটা ব্যাকআপের জন্য একটা নির্দিষ্ট সময়সূচী তৈরি করতে হবে এবং সেই অনুযায়ী নিয়মিত ব্যাকআপ নিতে হবে। ব্যাকআপগুলো এমন জায়গায় রাখতে হবে, যেখানে মূল ডেটা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও ব্যাকআপ ডেটা সুরক্ষিত থাকে। ডেটা পুনরুদ্ধারের জন্য একটা পরীক্ষামূলক প্রক্রিয়া তৈরি করতে হবে, যাতে প্রয়োজনের সময় দ্রুত ডেটা পুনরুদ্ধার করা যায়।নিরাপত্তা লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটলে কিভাবে তার মোকাবেলা করতে হবে, তার জন্য একটা পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে। এই পরিকল্পনাতে ঘটনার গুরুত্ব অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়ার নিয়ম থাকতে হবে। ঘটনার তদন্ত করার জন্য একটা দল গঠন করতে হবে, যারা দ্রুত ঘটনার কারণ খুঁজে বের করবে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। ঘটনা ঘটার পরে কিভাবে গ্রাহক এবং অন্যান্য স্টেকহোল্ডারদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে, তার একটা যোগাযোগ পরিকল্পনা থাকতে হবে।প্রযুক্তিগত নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাস্তবায়ন
১. ফায়ারওয়াল এবং অনুপ্রবেশ সনাক্তকরণ সিস্টেম
২. অ্যান্টিভাইরাস এবং অ্যান্টি ম্যালওয়্যার সফ্টওয়্যার
৩. ডেটা এনক্রিপশন পদ্ধতি
ফায়ারওয়াল নেটওয়ার্কের মধ্যে আসা এবং বাইরের ডেটা ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণ করে। এটা ক্ষতিকারক ট্র্যাফিককে আটকে দেয় এবং শুধুমাত্র অনুমোদিত ট্র্যাফিককে প্রবেশ করতে দেয়। অনুপ্রবেশ সনাক্তকরণ সিস্টেম (IDS) নেটওয়ার্কে কোনো সন্দেহজনক কার্যকলাপ দেখলে সেগুলোর সংকেত দেয়। এই সংকেতগুলো দেখে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া যায় এবং নেটওয়ার্ককে সুরক্ষিত রাখা যায়।কম্পিউটার এবং অন্যান্য ডিভাইসগুলোকে ভাইরাস ও ম্যালওয়্যার থেকে রক্ষা করার জন্য অ্যান্টিভাইরাস সফ্টওয়্যার ব্যবহার করা হয়। এই সফ্টওয়্যারগুলো নিয়মিত স্ক্যান করে ক্ষতিকারক ফাইলগুলোকে চিহ্নিত করে এবং সেগুলোকে সরিয়ে দেয়। অ্যান্টি ম্যালওয়্যার সফ্টওয়্যারগুলো নতুন ধরনের ম্যালওয়্যার থেকেও আপনার সিস্টেমকে রক্ষা করে।ডেটা এনক্রিপশন হলো ডেটাকে এমনভাবে পরিবর্তন করা, যাতে কেউ ডেটা অ্যাক্সেস করতে পারলেও সেটা বুঝতে না পারে। সংবেদনশীল ডেটা সবসময় এনক্রিপ্ট করে রাখা উচিত, বিশেষ করে যখন ডেটা এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় পাঠানো হয়। ডেটা এনক্রিপশনের জন্য বিভিন্ন ধরনের অ্যালগরিদম ব্যবহার করা হয়, যেমন – AES, RSA ইত্যাদি।সরবরাহকারী এবং তৃতীয় পক্ষের ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা
১. তৃতীয় পক্ষের নিরাপত্তা মূল্যায়ন
২. চুক্তিভিত্তিক নিরাপত্তা প্রয়োজনীয়তা
৩. সরবরাহকারী নিরীক্ষা পরিচালনা
সরবরাহকারী এবং তৃতীয় পক্ষগুলো আপনার ডেটা অ্যাক্সেস করতে পারে, তাই তাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা কেমন, সেটা জানা খুব জরুরি। তাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা দুর্বল হলে আপনার ডেটা ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারে। তাই সরবরাহকারীদের সাথে চুক্তি করার আগে তাদের নিরাপত্তা মূল্যায়ন করা উচিত।চুক্তিতে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে যে সরবরাহকারীকে কি কি নিরাপত্তা নিয়মকানুন মেনে চলতে হবে। ডেটা সুরক্ষা, গোপনীয়তা এবং ঘটনার প্রতিক্রিয়া সম্পর্কিত শর্তগুলো চুক্তিতে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। যদি সরবরাহকারী কোনো নিরাপত্তা লঙ্ঘন করে, তাহলে তার জন্য কি ব্যবস্থা নেওয়া হবে, সেটাও চুক্তিতে উল্লেখ থাকতে হবে।সরবরাহকারীরা চুক্তির শর্তাবলী মেনে চলছে কিনা, তা নিয়মিত নিরীক্ষা করতে হবে। নিরীক্ষার মাধ্যমে তাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতাগুলো খুঁজে বের করে সেগুলোকে সমাধানের জন্য তাদের সাথে কাজ করতে হবে। নিরীক্ষার ফলাফলগুলো পর্যালোচনা করে সরবরাহকারীর নিরাপত্তা ব্যবস্থা উন্নত করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।নিয়মিত পর্যবেক্ষণ এবং প্রতিক্রিয়া
১. নিরাপত্তা ঘটনা পর্যবেক্ষণ
২. ঘটনার প্রতিক্রিয়া প্রক্রিয়া
৩. ক্রমাগত উন্নতির জন্য শিক্ষা
আপনার নিরাপত্তা ব্যবস্থা সবসময় পর্যবেক্ষণ করতে হবে। কোনো অস্বাভাবিক কার্যকলাপ দেখলে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। নিরাপত্তা লগগুলো নিয়মিত নিরীক্ষণ করতে হবে এবং কোনো সন্দেহজনক কিছু দেখলে সেগুলোর তদন্ত করতে হবে। নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণ করার জন্য বিভিন্ন ধরনের টুলস এবং টেকনিক ব্যবহার করা যেতে পারে।নিরাপত্তা লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটলে কিভাবে তার মোকাবেলা করতে হবে, তার জন্য একটা সুস্পষ্ট প্রক্রিয়া থাকতে হবে। ঘটনার গুরুত্ব অনুযায়ী দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। ঘটনার তদন্ত করার জন্য একটা দল গঠন করতে হবে, যারা ঘটনার কারণ খুঁজে বের করবে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। ঘটনা ঘটার পরে কিভাবে গ্রাহক এবং অন্যান্য স্টেকহোল্ডারদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে, তার একটা যোগাযোগ পরিকল্পনা থাকতে হবে।নিরাপত্তা একটি চলমান প্রক্রিয়া। নতুন নতুন ঝুঁকি এবং দুর্বলতা সবসময় দেখা দিতে পারে, তাই নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে ক্রমাগত উন্নত করতে হবে। আগের ঘটনাগুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে। নিরাপত্তা সম্পর্কে নতুন তথ্য এবং প্রযুক্তির সাথে সবসময় আপ-টু-ডেট থাকতে হবে।
ঝুঁকির উৎস | সম্ভাব্য প্রভাব | মোকাবেলার উপায় |
---|---|---|
হ্যাকিং | ডেটা চুরি, সিস্টেমের ক্ষতি | ফায়ারওয়াল, অনুপ্রবেশ সনাক্তকরণ সিস্টেম |
ভাইরাস ও ম্যালওয়্যার | ডেটা নষ্ট, সিস্টেমের ক্ষতি | অ্যান্টিভাইরাস সফ্টওয়্যার, নিয়মিত স্ক্যান |
কর্মচারীর ভুল | ডেটা লিক, নিরাপত্তা লঙ্ঘন | সচেতনতা প্রশিক্ষণ, কঠোর নিয়ম |
প্রাকৃতিক দুর্যোগ | ডেটা সেন্টার নষ্ট, ডেটা হারানো | ডেটা ব্যাকআপ, দুর্যোগ পুনরুদ্ধার পরিকল্পনা |
তথ্য সুরক্ষা ব্যবস্থাপনা একটি চলমান প্রক্রিয়া। এই আর্টিকেলে আমরা তথ্য সুরক্ষার কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক নিয়ে আলোচনা করলাম। আশা করি, এই বিষয়গুলো অনুসরণ করে আপনি আপনার ডেটাকে সুরক্ষিত রাখতে পারবেন। মনে রাখবেন, ডেটা আপনার ব্যবসার জন্য অত্যন্ত মূল্যবান, তাই এর সুরক্ষা নিশ্চিত করা আপনার দায়িত্ব।
শেষের কথা
এই আর্টিকেলে আমরা তথ্য সুরক্ষা ব্যবস্থাপনার কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক নিয়ে আলোচনা করলাম। আশা করি, এই বিষয়গুলো অনুসরণ করে আপনি আপনার ব্যবসাকে সুরক্ষিত রাখতে পারবেন। মনে রাখবেন, ডেটা আপনার ব্যবসার জন্য অত্যন্ত মূল্যবান, তাই এর সুরক্ষা নিশ্চিত করা আপনার দায়িত্ব। ডেটা সুরক্ষায় আরও কিছু জানার থাকলে, আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।
গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
১. শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন: আপনার অ্যাকাউন্টের জন্য একটি জটিল এবং অনন্য পাসওয়ার্ড তৈরি করুন।
২. দ্বি-স্তর প্রমাণীকরণ চালু করুন: আপনার অ্যাকাউন্টগুলিতে সুরক্ষার একটি অতিরিক্ত স্তর যুক্ত করুন।
৩. নিয়মিত আপনার সফ্টওয়্যার আপডেট করুন: আপনার ডিভাইস এবং অ্যাপ্লিকেশনগুলিতে সুরক্ষা প্যাচ ইনস্টল করুন।
৪. ফিশিং আক্রমণ থেকে সাবধান থাকুন: সন্দেহজনক ইমেল বা লিঙ্কগুলিতে ক্লিক করা থেকে নিজেকে বাঁচান।
৫. আপনার ডেটা ব্যাকআপ করুন: নিয়মিত আপনার গুরুত্বপূর্ণ ডেটা ব্যাকআপ করুন, যাতে প্রয়োজনে পুনরুদ্ধার করা যায়।
গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলির সারসংক্ষেপ
১. তথ্যের শ্রেণীবিন্যাস করে ডেটার গুরুত্ব অনুযায়ী সুরক্ষা নিশ্চিত করুন।
২. কর্মীদের সচেতনতা বাড়াতে নিয়মিত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করুন।
৩. নিরাপত্তা নীতি তৈরি করে তা কঠোরভাবে অনুসরণ করুন।
৪. নিয়মিত নিরাপত্তা নিরীক্ষা এবং দুর্বলতা মূল্যায়ন করুন।
৫. সরবরাহকারী এবং তৃতীয় পক্ষের ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার দিকে নজর রাখুন।
প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন (FAQ) 📖
প্র: ইনফরমেশন সিকিউরিটি ম্যানেজমেন্ট (ISM) আসলে কী?
উ: ইনফরমেশন সিকিউরিটি ম্যানেজমেন্ট (ISM) হল তথ্যকে সুরক্ষিত রাখার একটা পদ্ধতি। এটা একটা কাঠামোর মতো, যেখানে কিছু নিয়মকানুন, পলিসি আর প্রক্রিয়া থাকে। এইগুলো মেনে চললে, কোনও কোম্পানি বা ব্যক্তি তাদের গুরুত্বপূর্ণ ডেটাকে হ্যাকারদের হাত থেকে বাঁচাতে পারে, ডেটা চুরি হওয়া আটকাতে পারে এবং তথ্যের গোপনীয়তা বজায় রাখতে পারে। আমি যখন প্রথম নিজের ছোট ব্যবসার জন্য ISM শুরু করি, তখন মনে হয়েছিল এটা খুব জটিল। কিন্তু ধীরে ধীরে বুঝলাম, এটা আসলে আমার ব্যবসাকে অনেক বড় ক্ষতির হাত থেকে বাঁচানোর একটা উপায়।
প্র: ইনফরমেশন সিকিউরিটি ম্যানেজমেন্ট (ISM) কেন দরকার?
উ: দেখুন ভাই, এখনকার দিনে ডেটা হল সোনা! আপনার ব্যবসার সব তথ্য, আপনার গ্রাহকদের ব্যক্তিগত ডিটেলস যদি চুরি হয়ে যায়, তাহলে আপনার ব্যবসার সুনাম তো যাবেই, সাথে অনেক আর্থিক ক্ষতিও হতে পারে। ইনফরমেশন সিকিউরিটি ম্যানেজমেন্ট (ISM) আপনাকে এই ঝুঁকিগুলো থেকে বাঁচায়। এটা আপনার ব্যবসাকে আরও বেশি নির্ভরযোগ্য করে তোলে, কারণ সবাই জানে আপনার ডেটা সুরক্ষিত। আমার এক বন্ধু, শুরুতে ISM-কে পাত্তা দেয়নি। কিছুদিন আগে তার কোম্পানির ডেটা লিক হয়ে যাওয়ায়, তাকে অনেক ঝামেলা পোহাতে হয়েছে। তাই বলছি, আগে থেকে সাবধান হওয়া ভালো।
প্র: ইনফরমেশন সিকিউরিটি ম্যানেজমেন্ট (ISM) শুরু করতে কী কী করতে হয়?
উ: ইনফরমেশন সিকিউরিটি ম্যানেজমেন্ট (ISM) শুরু করতে প্রথমে আপনাকে একটা রিস্ক অ্যাসেসমেন্ট করতে হবে। মানে, আপনার সিস্টেমে কোথায় কোথায় দুর্বলতা আছে, সেটা খুঁজে বের করতে হবে। তারপর সেই অনুযায়ী কিছু সিকিউরিটি পলিসি তৈরি করতে হবে। আপনার কর্মীদের এই পলিসিগুলো সম্পর্কে জানাতে হবে এবং তাদের ট্রেনিং দিতে হবে। নিয়মিত আপনার সিস্টেমের নিরাপত্তা পরীক্ষা করতে হবে আর প্রয়োজন অনুযায়ী আপডেট করতে হবে। আমি যখন শুরু করেছিলাম, তখন একজন এক্সপার্টের সাহায্য নিয়েছিলাম। তিনি আমাকে পুরো ব্যাপারটা বুঝিয়ে দিয়েছিলেন। আপনিও চাইলে প্রথমে একজন এক্সপার্টের পরামর্শ নিতে পারেন।
📚 তথ্যসূত্র
Wikipedia Encyclopedia